সংসারের হাল ধরতে সন্ধ্যে বেলা ফুচকা বিক্রি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর
সৌমেন দাস; লাভপুর: পরিবারের হাল ধরতে সন্ধ্যে হলেই ফুচকার স্টল নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তার মাঝেই চলছে পড়াশুনা, ও মাধ্যমিক পরীক্ষা। লাভপুর সন্দীপন পাড়ার বাসিন্দা লাবনী ধারার জীবন যুদ্ধই যেন এখন উৎসাহ যোগাচ্ছে মানুষজনকে।
পরিবার সূত্রে খবর, বিগত চার বছর ধরে এভাবেই ফুচকা বিক্রি করে সংসার চালানোর পাশাপাশি নিজের পড়াশুনা চালিয়ে আসছে লাবনী। সঙ্গী হিসেবে কখনো সঙ্গ দিয়েছে তার দিদি লাভলী ধারা আবার কখনো তাঁর মা মৌসুমী ধারা।
কিন্তু হঠাৎ কেন তাকেই পরিবারের হাল ধরতে হচ্ছে?
এই বিষয়ে লাবনী ধারা জানাই, দীর্ঘদিন ধরেই তার বাবা লক্ষণ ধারা এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং এই ব্যবসা থেকেই তাদের পরিবারের রুজি রুটির জোগাড় হতো। কিন্তু চার বছর আগে তার বাবার হঠাৎ করেই ব্রেন স্ট্রোক হয় এবং তার জেরে এক প্রকার দৈন্য দশা নেমে আসে তখন তাদের পরিবারে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েই তখন সে ও তার দিদি লাভলী ধারা দুজনে মিলে পুনরায় তাদের বাবার ব্যবসা শুরু করে। তবে যেহেতু তার পড়াশুনার প্রতিও আগ্রহ ছিল প্রথম থেকেই তাই সে ফুচকা বিক্রির পাশাপাশি পড়াশুনাও চালিয়ে যেতে থাকে।
এই প্রসঙ্গে লাবনীর মা মৌসুমী দেবী জানান, দুই মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে তার পরিবারে তখন চার জনের বাস। এবং এই চার জনের মধ্যে তাদের পরিবারে তখন একমাত্র রোজগেরে করেন তার স্বামী লক্ষণ বাবু। কিন্তু চার বছর আগে যখন তার স্বামীর শরীর হঠাৎ করে অসুস্থ হয়, তখন তার স্বামীর চিকিৎসা ও পরিবারের অন্যান্য খরচ জোগানের রাস্তা সম্পুর্ন ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁর দুই মেয়ে তাদের বাবার ব্যবসাকে পুনরায় চালু করে। পাশাপাশি ছোট মেয়ে চেয়েছিল নিজের পড়াশুনা চালিয়ে যেতে। তাই প্রথম দিকে একটু অনিচ্ছা থাকলেও পরে তাকে সমর্থন করি। তার স্কুলের দিদিমনিরাও তাকে যথেষ্ঠ সাহায্য করে। তবে বর্তমানে বড়ো মেয়ের অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেওয়ার কারণে তারা দুই মা মেয়ে মিলেই ব্যবসাটা ধরে রেখেছে। আগামীতেও হয়তো এভাবেই ধরে রাখতে হবে। তবে মেয়ে যদি তার পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চাই, সেক্ষেত্রে যতটা সম্ভব চেষ্টা করবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন