জমিতে বার বার আগুন জ্বালালে তা আর কৃষিজমি থাকবে না, তাই আগুন বন্ধে প্রকৃত সমস্যার সমাধান প্রয়োজন


সম্পাদকীয় প্রতিবেদন

 দেবাশিস্ পাল,মাটির খবর: সময়ের সাথে সাথে বাংলা তথা ভারতীয় কৃষি পদ্ধতিতেও আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ শুরু হয়েছে।শস্য কেটে ঘরে তোলার যে বিস্তর  ঝামেলা ও শারিরীক শ্রম, তার প্রয়োজন মিটেছে। কম্বাইন হারভেস্টারের সাহায্যে জমি থেকে শস্য ঝারাই মারাই করে একদম বাড়ি চলে আসছে, কিন্তু সবক্ষেত্রেই যেন কিছু না কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকবেই, আর আধুনিক সভ্যতার বোধহয় সবথেকে বড়ো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূষণ,কৃষির এই আধুনিকীকরণের মধ্যেও যেন মাত্রাতিরিক্ত দূষণে পরিবেশে এক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে, আর আমাদের উদাসীনতা ও সচেতনতার অভাবে যে তা আর‌ও মারাত্মক আকার ধারণ করতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।অতি অল্প খরচে ও অল্প সময়ে চাষী তার ক্ষেতের ধান ঝাড়াই করে বাড়ীতে তুলতে পারছে এই মেশিনের সাহায্যে।কিন্তু এই পদ্ধতিতে সবথেকে বড়ো সমস্যা হচ্ছে খড় না পাওয়া, এক্ষেত্রে ধানের অবশিষ্ট গাছ জমিতেই ছড়িয়ে পড়ে থাকে আর তার ফলে আগামীতে জমিতে চাষ দেওয়া কষ্টকর হয়ে পরে, সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিগত কয়েক বছর ধরে চাষীরা ব্যপক হারে এই খড় পুড়িয়ে ফেলেছে যার ফলে মাটি ও বায়ুমণ্ডলে সাংঘাতিক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে,আর তার ফল কিন্তু হতে পারে সুদূরপ্রসারী।বারবার আগুন জ্বালানোর ফলে মাটি শক্ত হয়ে উর্বরতা কমে তো যাবেই,এছাড়াও উপকারী কীটপতঙ্গ, জীবাণুগুলোও একসময় শেষ হয়ে যাবে। যদিও চাষীদের একাংশের মতে আগেও নাড়ায় আগুন ধরিয়ে জমি তৈরি করা হতো। কিন্তু এটা ভুললে চলবে না মেশিনে ধান কাটার পর জমিতে পড়ে থাকা খড়ের পরিমাণ অনেক বেশি,যার আগুন মাটিকে সম্পূর্ণ শক্ত করে দেয়।

মাঠের মধ্যেই চলছে ন্যাড়া পোড়া । (নিজস্ব চিত্র)

                   এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গেলে  শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক ভাবে সচেতন করার করার কর্মসূচি পালন না করে, সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধান খুঁজে বের করা যেতে পারে। ঠিক যে কারনে চাষীদের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত সেই সমস্যার সমাধান করতে,দ্রুত খড় পচিয়ে ফেলার কোনরকম সহজ উপায় আছে কিনা সেদিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আরও একটু  সক্রিয়তা বাড়ালেই হয়তো এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। 

মন্তব্যসমূহ