ভারত বিখ্যাত তিন পদ্মশ্রী,যারা ভেবেছেন মানুষের কথা,পরিবেশের কথা

সম্পাদকীয় প্রতিবেদন: সবমিলিয়ে সোমবার ১০২ জনের হাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তুলে দিলেন পদ্ম পুরস্কার।তারা প্রত্যেকেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন,তবে তার মধ্যে কয়েকজন পদ্মশ্রী মানুষের মনেও চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে তা বলা যায়।আজ এমন  তিনজন পদ্মশ্রীর কথা জানাবো যারা নজর কেড়েছেন সমগ্র বিশ্বের।

(চিত্রালঙ্করণ--সৌমেন দাস)

পদ্মশ্রী ডাঃ সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়: বাউল ভূমি রাঙামাটি বীরভূমের অন্যতম শহর বোলপুরের খ্যাতনামা চিকিৎসক ডাঃ সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়,বিদেশের শিক্ষা শেষে দেশ-বিদেশের লোভনীয় চাকরি প্রত্যাখ্যান করে দীর্ঘ ছয় দশক ধরে মাতৃভূমি বোলপুরে মাত্র এক টাকা ভিজিট নিয়ে চিকিৎসা করে  চলেছন নিষ্ঠার সঙ্গে। বোলপুরের হরগৌরীতলায় নিজস্ব চেম্বারে প্রতিদিন নিয়ম করে চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর এই মহৎ কাজ। ইতিপূর্বে নাম উঠেছে 'গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড'এ।আর এবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই মহান চিকিৎসক তথা বীরভূমের এক টাকার ডাক্তারের হাতে তুলে দিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার।

পদ্মশ্রী তুলসী গৌড়া: বিশ্বকে অবাক করে পদ্মশ্রী পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে খালি পায়ে, সাদামাটা পোশাকে সাতাত্তর বছরের বৃদ্ধা। তিনি তুলসী গৌড়া, নিজের প্রচেষ্টায় ত্রিশ হাজার গাছ লাগিয়ে ও তাদের লালন পালন করে বড়ো করে ইতিমধ্যে নজির স্থাপন করেছেন।কর্ণাটকের হালিক্কি সম্প্রদায়ের তুলসী গৌড়া অরণ্যের এনসাইক্লোপিডিয়া নামে পরিচিত হয়েছেন ইতিমধ্যেই,বিশ্বের অধিকাংশ গাছ সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে তাঁর। বনবিভাগকে সহযোগিতা করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। সমগ্র বিশ্ব যেখানে পরিবেশ সমস্যায় জর্জরিত, সেখানে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও তুলসী গৌড়ার এই কাজ সমগ্র বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাঁর এই কাজকে সম্মান জানাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তুলে দিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার।আর এই পুরস্কারে যেন গর্ববোধ  করছে সমগ্র ভারত।

পদ্মশ্রী হারেকাল হাজাব্বা: ছেষট্টি বছর বয়সী ম্যাঙ্গালুরুর এই কোমলালেবু বিক্রেতা শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকার জন্য পেলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার।নিজে অশিক্ষিত হয়েও দারিদ্রতাকে সঙ্গী করে নিজের গ্রামে তিল তিল করে গড়ে তোলেন একটি স্কুল। দীর্ঘ কুড়ি বছরের চেষ্টার ফসল তাঁর এই স্কুল শুরু হয় ২০০০সালে। নিজের অশিক্ষা থেকে তিনি অনুধাবন করতে পেরেছেন শিক্ষার গুরুত্ব আর তাই অশিক্ষার অন্ধকারে আলো জ্বালার তাঁর এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে সমগ্র বিশ্ব।

     ডাঃ সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়,তুলসী গৌড়া বা হারেকাল হাজাব্বা প্রত্যেকেই ভালোবেসেছেন মানুষকে, অন্তর থেকে ভালোবাসতে পেরেছেন প্রকৃতি পরিবেশকে।সারাটা জীবন ধরে যে একাগ্রতার সঙ্গে তাঁরা কাজ করে চলেছেন তাতে উপকৃত আমরা সকলেই,তাই তাদের পদ্মশ্রী পাওয়াটা আমাদের কাছে সম্মানের ও গর্বের।

মন্তব্যসমূহ