উপাচার্যকে জোর ধাক্কা কলকাতা হাইকোর্টের। 'অবিলম্বে বহিষ্কৃত তিন পড়ুয়াকে ক্লাসে ফেরাতে হবে' আদেশ বিচারপতির

সৌমেন দাস; শান্তিনিকেতন: কলকাতার হাইকোর্টের রায়ে বড়সড় ধাক্কা বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। আগামী ৯ই সেপ্টেম্বর থেকেই বহিস্কৃত পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরাবার নির্দেশ আদালতের। রায় ঘোষণার পর স্বাভাবিক ভাবেই উৎসবের মেজাজ শান্তিনিকেতন জুড়ে। অবশ্য আন্দোলনকারীরা একে নৈতিক জয় হিসেবেই বিবেচনা করছেন।

সূত্রের খবর, তিন পড়ুয়ার বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের উপর অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামীকাল থেকেই বহিষ্কৃত তিন পড়ুয়াকে স্বাভাবিক পঠন পাঠনে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হাইকোর্টের এই নির্দেশ শোনার পর উপাচার্য যে নতুন করে  জোর ধাক্কা খেলো এমনই মত অভিজ্ঞ মহলের। 

আদালতের এই রায় স্বাগত জানিয়েছেন আন্দোলনরত পড়ুয়া ও অধ্যাপকরা। অনশনে বসা বহিষ্কৃত ছাত্রী রূপা চক্রবর্তী বলেছেন, ''এটা আমাদের প্রাথমিক জয়। আমরা আমাদের নায্য দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। আমরা কোনদিনই উপাচার্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নামিনি। কিন্তু উপাচার্যই আমাদের পড়াশুনা থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চেয়েছেন। তাই উপাচার্যের অপসারনের দাবি থেকে আমরা সরছি না। সেই দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে আদালতের নির্দেশ মেনেই।'' 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তিন পড়ুয়ার বহিষ্কারের প্রতিবাদে গত ২৭ আগস্ট থেকে উপাচার্যের বাংলোর সামনে অবস্থানে বসেছেন পড়ুয়ায়া। উপাচার্যের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছেন পড়ুয়ারা। তাতে সামিল হয়েছেন অধ্যাপকদের একটা অংশ। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে এই আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানী শেষে এদিন কলকাত হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। পড়ুয়াদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের উপর অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশ ও পড়ুয়াদের স্বাভাবিক পঠন পাঠন চালু করার নির্দেশের পাশাপাশি সব রকম বিক্ষোভ অবস্থান প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে। 

 পড়ুয়াদের আইনজীবি শামিম আহমেদ জানিয়েছেন, আদালতের পর্যবেক্ষন পড়ুয়াদের অপরাধের যা যা অভিযোগ উঠেছে তার থেকে গুরুতর শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আগামী বুধবার ফের শুনানী আছে মামলার। আন্দোলনরত অধ্যাপক ভিবিউফার সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেছেন, "এটা আমাদের প্রাথমিক জয়। অধ্যাপকদের পক্ষ থেকেও এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা করা হবে। কারন বহু অধ্যাপকও উপাচার্যের রোষের শিকার হয়ে রয়েছে। তবে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে।"

বহিস্কৃত ছাত্র সোমনাথ সৌ জানায়, "এটা উপাচার্যের একটা বড় ধাক্কা। আমরা আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। আমাদের আন্দোলন চলবে। আদালতের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"