শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ তৈরিতে বাধা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে চিঠি শুভেন্দুর

সৌমেন দাস; বোলপুর: একুশের নির্বাচনে উন্নয়নকে হাতিয়ার করেও নিজেদের ভরাডুবি আটকাতে পারেনি বিজেপি, কার্যত রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছিল তারা। এবার সেই ভরাডুবিকে রুখতে সরাসরি হিংসার রাজনীতি শুরু করলো বিজেপি। বোলপুরের মেডিকেল কলেজ যাতে না হয়, তার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে চিঠি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা, বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকার। পাশাপাশি সেখানে আরো বলা হয়েছে যদি ইতিমধ্যেই সেই অনুমোদন দেওয়া হয় গিয়ে থাকে, তবে সেটিকেও বিবেচনা করা হোক।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি বোলপুরের একটি স্বেচ্ছা সেবী সংগঠনের উদ্যোগে বোলপুর শহরের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রামে প্রায় দু'শো বিঘা জমির উপর অত্যাধুনিক পি পি পি মডেলে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হওয়ার পরিকল্পনা শুরু হয়, এবং সেই মোতাবেক ওই জায়গায় দেড়শো আসন বিশিষ্ট কলেজের প্রাথমিক গঠনগত কাজও সম্পন্ন হয়। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে বোলপুরের সিয়ান গ্রামে অবস্থিত বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকেই ওই কলেজের হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে।  সাম্প্রতি সেই জায়গাও পরিদর্শন করেছেন, মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার একটি দল এবং তারা এই বিষয়ে সবুজ সংকেত দিলেই শুরু হবে পঠন পাঠন। 


কিন্তু আজ শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবি কে দেওয়া চিঠি মারফৎ সেই কলেজ যাতে না হয়, এমনটাই আবেদন করেছেন। তিনি তাঁর ওই চিঠিতে লিখেছেন, 'স্বাধীন' নামের যে বেসরকারি সংস্থা ওই কলেজটি তৈরি করছে, সেটি আসলে বীরভূম জেলার তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের মদত পুষ্ট। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, অনুব্রত মণ্ডল অসৎ ব্যক্তি এবং তিনি গরু পাচার ও কয়লা পাচারের সঙ্গেও যুক্ত। তাই যদি ইতিমধ্যে ওই কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়ে গিয়ে থাকে তবে সেটা পুনর্বিবেচনা করা হোক। 


পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, যে জমিতে ওই মেডিকেল কলেজ গড়া হচ্ছে, তাঁর মালিকানাতেও সংশয় আছে। এছাড়াও বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে সেটিও অনুব্রত মণ্ডলের কারসাজি। 
যদিও এই চিঠির কথা শুনে হতবাক ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্নধার মলয় পীঠ। তিনি জানান, সম্ভবত শুভেন্দু বাবুর কাছে কোনো ভুল ইনফরমেশন গিয়েছে, যার জেরে উনি এমন একটা কান্ড করে ফেলেছেন। তবে এই কলেজের সমস্ত কাগজ পত্র থেকে শুরু করে কলেজ, সমস্তটাই সরেজমিনে দেখে গিয়েছেন মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার একটি দল। এর পর যদি শুভেন্দু বাবু নিজে আসতে চান, বা কাউকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠাতে চান, তবে পাঠাতে পারেন আমরা সমস্ত কাগজপত্র দেখাবো।  তবে একটা কথা, স্বাধীন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এখানে সরাসরি ভাবে কোনো রাজনৈতিক যোগ নেই। তবে হ্যাঁ, বোলপুর শান্তিনিকেতনের মতো একটি এলাকায় এতো বড় একটি কলেজ করতে গেলে সেখানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সকলের সঙ্গেই সু-সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়। কিন্তু সেখানে তাঁদের সংস্থার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। 
ঘটনা প্রসঙ্গে বোলপুর বিধানসভার বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ অবশ্য বলেন, লোকজন না জেনে বুঝে কোনো কথা বললে সেখানে কার কী করার আছে। যে কলেজটি হচ্ছে সেটি একটি বেসরকারি সংস্থার তত্বাবধানে হচ্ছে, সেখানে অনুব্রত মণ্ডলের কোনো হাত নেই।

মন্তব্যসমূহ