বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে অপসারণের দাবি নিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরব হলো ওয়েবকুটা

সৌমেন দাস; মাটির খবর: বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে অপসারণের দাবি তুলে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)। আজ বিকালে এমনই একটি নির্দেশিকা জারি করা হলো সংস্থার তরফ থেকে। 
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে উপাচার্য পদে নিযুক্ত হন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, তার পর থেকেই যেন ক্রমশঃ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে অচলায়তনে পরিণত হতে শুরু করেছে কবিগুরুর স্বপ্নের এই বিশ্বভারতী। কখনো মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া থেকে শুরু করে বিশ্বভারতীকেই চির কালের জন্য উঠিয়ে দেওয়ার হুমকি, আবার কখনো বিশ্বভারতীর রীতি রেওয়াজকে তোয়াক্কা না করেই নতুন নতুন পন্থা নিয়ে আসা বা সহ কর্মী ও ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে বিবাদ! এই সব বিষয়ে যেন বিদ্যুৎ বাবু সিদ্ধহস্ত। 
গত কয়েক দিনে যেন সেই বিষয়ে সন্দেহ আরও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে সাধারণ মানুষের। 
গত নয় তারিখের ঘটনা, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলো একটি অডিও ক্লিপ যেখানে শোনা যাচ্ছে, বিশ্বভারতীর শতাধিক শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদেরকে নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, সেই বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ করেই অধ্যাপক ও অধ্যাপিকাদেরকে নিয়ে কড়া ভাষায় সমালোচনা শুরু করলেন তিনি, বাদ দিলেন না তাদের পরিবার পরিজন ও শিক্ষা দীক্ষা নিয়ে সমালোচনা করতে। পাশাপাশি ওই একই বৈঠকে তিনি সরাসরি সংঘাতে জড়ালেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক মানস মাইতির সঙ্গে, এমনকি শেষ পর্যন্ত তাকে সেই বৈঠক থেকে বহিস্কারও করেদেন। শুরু হয় উপাচার্য বনাম অধ্যাপক সংঘাত। বৈঠকে ঘটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে শান্তিনিকেতন থানায় মেল মারফত একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন অধ্যাপক মানস মাইতি।  বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে তিন দিনের ভিতরেই দু'টি শো-কজ নোটিশও পাঠানো হয় অধ্যাপক মানস মাইতিকে। সেই পরিস্থিতি কিছুটা চাপা পড়তে না পড়তেই আবার শুরু হয় বিতর্ক, আর এই বিতর্কেরও কেন্দ্রবিন্দু সেই অডিও ক্লিপ। সূত্রের খবর গত ১৫ই জুন, আবার একবার বিশ্বভারতীর শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদেরকে নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, এবং সেখানে শোনা যায় অধ্যাপক চক্রবর্তী বৈঠক চলা কালীন টেনে নিয়ে আসেন বিশ্বভারতী থেকে সাময়িক বহিস্কার হওয়া তিন ছাত্র ছাত্রী সোমনাথ সৌ, ফাল্গুনী পান ও রূপা চক্রবর্তীর প্রসঙ্গ এবং তাদেরকে নির্দ্বিধায় আখ্যা দেন 'মাওবাদী'। পাশাপাশি ওই ছাত্রছাত্রীদেরকে তাদের ধর্ণা মঞ্চে সহযোগিতা করার অপরাধে মাওবাদী তকমা দেন বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গাঙ্গুলিকেও।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শিক্ষা কর্মী, ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে নানাবিধ কারনে দুর্ব্যবহার ও তাদেরকে বহিস্কার করার মতো ছোট বড়ো ঘটনা আছেই। 

                          প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি

ফলে সংস্থার তরফে ওই প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কার্যকালে ঘটে চলা একের পর এক বিতর্কিত ঘটনা যেন ক্রমশঃ অরাজকতার সৃষ্টি করছে কবিগুরুর স্বপ্নের বিশ্বভারতীতে, এবং ভারসাম্য নষ্ট করছে যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। তাই এই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য তারা  দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও উপাচার্যের অপসারণের দাবি জানাচ্ছে।

মন্তব্যসমূহ