"মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যানার দৃশ্য দূষণের সমান।" লাভপুরের জনসভা থেকে বললেন রুপা গাঙ্গুলি। "চোখে ছানি পড়েছে, চোখের আলো প্রকল্পে চোখের চিকিৎসা করান' পাল্টা অভিজিৎ সিনহা।

সৌমেন দাস; লাভপুর: একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে আরও রোমহর্ষক করে তুলতে রাজ্য ও কেন্দ্র বিজেপির যৌথ উদ্যোগে কর্মসূচি 'পরিবর্তন যাত্রা'। যে যাত্রা গত পরশু অর্থাৎ ৯ই ফেব্রুয়ারি সোমবার তারাপিঠ মন্দির থেকে শুরু হয়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার হাত ধরে এবং বিজেপির তরফে যা জানানো হয়েছিল তাতে এই পরিবর্তন যাত্রার রথ ঘুরবে গোটা বীরভূম জেলা জুড়েই। আজ সেই যাত্রার তৃতীয় দিনে রথ এসে পৌছালো লাভপুর বিধানসভায়। সকাল ১১ টা নাগাদ সাঁইথিয়া থেকে রওনা দেওয়ার পরে দুপুর নাগাদ লাভপুরের পঞ্চায়েত সমিতির মাঠে এসে পৌঁছায় রথটি, এবং সেখানেই একটি জনসভা করা হয় বিজেপির তরফে। জনসভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব রূপা গাঙ্গুলী, বীরভূম জেলা অবজার্ভার বিবেক শোনকর প্রমুখ নেতৃত্ব বৃন্দ। 

এদিনের সভা থেকেই কার্যত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি এক হাত নিলেন বিবেক শোনকার। তিনি বলেন তৃণমূল নেতৃত্ব বারবার বিজেপিকে কটাক্ষ করে 'বহিরাগত' বলে তবে এই বহিরাগত দলের জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজও জীবিত আছেন বলে তিনি ২০০৯ সালে মেট্রো স্টেশনে ধর্ণা ও লোকসভা অধিবেশনে স্থগিতের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। 

বিজেপির রাজ্য নেত্রী তথা সাংসদ তিনি আবার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ব্যানারকে দৃশ্য দূষণের সামগ্রী বলতেও দ্বিধা করলেন না। তাঁর বক্তব্য কোটি কোটি টাকা খরচ খরচা করে ছাপানো মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণাদায়ক ব্যানার দেখা তাঁর কাছে দৃশ্য দূষণের সমান। তবে এই বক্তব্যের পরেই তিনি স্পষ্ট জানিয়েও দেন তিনি স্বাধীন রাষ্ট্রের বাসিন্দা, এবং তাঁর সেখানে বাক স্বাধীনতা রয়েছে। 

লাভপুরের সভাতে রূপা গাঙ্গুলি। (নিজস্ব চিত্র)


বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রাজীব ভৌমিক তাঁর বক্তব্যের মধ্যে নাম না করেই কটাক্ষ করলেন অনুব্রত মণ্ডলকে। তিনি অনুব্রত মণ্ডলের 'খেলা হবে' বক্তব্যের পাল্টা উত্তরে বলেন খেলা নিশ্চয় হবে তবে খেলবে বিজেপি, তৃণমূল সেখানে দর্শক মাত্র। কারন খেলতে গেলে ১১ জন খেলোয়ার দরকার, আর সেই ১১ জন এখন আর তৃণমূলে নেই। এছাড়াও অনুব্রত মণ্ডলের নিরাপত্তা প্রসঙ্গেও তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন মোটা দাদার এখন আর শুধু পুরুষ সিকিউরিটি তে হয় না, মহিলাও লাগে, কারন তিনি জানেন কোনোদিন হয়তো মহিলারা তাঁর উপরেও হামলা করে বসবেন। 

বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাও এদিনের মঞ্চ থেকে নাম না করেই এক হাত নিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। তিনি বলেন তৃণমূল দল কাটমনির দল। যে দলের মূল পান্ডা বোলপুরের মোটা দাদা। জেলার যোগ্য ছেলে মেয়েরা এখন চাকরি পাচ্ছে না, পরিবর্তে চাকরি পাচ্ছে যার বাবার টাকা আছে, যারা তাঁকে উপঢৌকন দিতে পারছে তারাই এখন চাকরি পায়। 

তবে এই বিষয়ে পাল্টা মন্তব্য করেন বীরভূম জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিনহা। তিনি রুপা গাঙ্গুলির দৃশ্য দূষণ প্রসঙ্গে বলেন তাঁর বয়স হচ্ছে, চোখে ছানি পড়েছে তাই রাজ্য সরকারের যে চোখের আলো প্রকল্প সেই প্রকল্পের আওতায় নিজের চোখের চিকিৎসা করাতে।

মন্তব্যসমূহ